ভাষা শিক্ষায় ব্যাকরণের ভূমিকা || bengali pedagogy pdf part 3

ভাষা শিক্ষায় ব্যাকরণের ভূমিকা || bengali pedagogy pdf part 3

প্রিয় বন্ধুরা,

আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম যা আপনাদের আগত পরীক্ষার জন্য খুবই উপকারী হয়ে উঠবে। যারা Primary & Upper Primary Tet এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জয়েন হয়ে যান এখানে সিলেবাস অনুযায়ী সমস্ত নোট শেয়ার করা হয়। তাই সময় মত সমস্ত নোট পেতে যুক্ত হয়ে যান।

bengali pedagogy pdf part 3

প্রাথমিক ধারণা (Preliminary Concept):

ভাষা হল ভাবের বাহন। একজনের ভাব বা ধারণা অন্য একজনের কাছে পৌঁছে যায় ভাষার মাধ্যমে। ভাষায় মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগের কাজটি সংঘটিত করে। সুতরাং যোগাযোগ স্থাপনই ভাষার মূল উদ্দেশ্য। এই যোগাযোগ স্থাপন দুভাবে হয়1. কথাবার্তার মাধ্যমে অর্থাৎ মৌখিক যোগাযোগ, 2. লেখার মাধ্যমে কথার লিখিত আকারে একজনের ধারণা অন্য একজনের সঙ্গে সঞ্চারিত হয়। এখন প্রশ্ন এই যে, যোগাযোগ স্থাপনের জন্য যে ভাষাজ্ঞান প্রয়োজন, সেই ভাষাজ্ঞান শিখনের ক্ষেত্রে ব্যাকরনের ভূমিকা কি?- এটাই বর্তমান আলোচনার মূল বিষয়।

মূল বিষয়ে যাওয়ার আগে বিদ্যালয় শিক্ষা স্তরে ব্যাকরণকে কোন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হয়, সেই বিষয়ে একটু আলোকপাত করা প্রয়োজন। রাজ্যে একজন শিক্ষক যখন শ্রেণীকক্ষে ব্যাকরণ শিক্ষা দেন, তখন তিনি ব্যাকরণের চিরাচরিত ধারায় অনুসরণ করেন। এক্ষেত্রে ব্যাকরণের একটি নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রম থাকে। পাঠক্রম অনুসারে ব্যাকরণের প্রত্যেকটি ক্ষেত্র বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন।

চিরাচরিত ধারায় ব্যাকরণ শব্দের অর্থ (Meaning of Grammar in Traditional System):

‘ব্যাকরণ’ কি?-বিভিন্ন সময় ভাষাবিজ্ঞানীরা ‘ব্যাকরণ’ শব্দটিকে নানাভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। আমরা এখানে যে সমস্ত ব্যাখ্যার উল্লেখ না করে চিরাচরিত অর্থে ‘ব্যাকরণ’ শব্দটিকে বোঝার চেষ্টা করব। ব্যাকরণ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ‘বিশেষভাবে বিশ্লেষণ’। এ থেকে ব্যাকরণের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয় তা এইরকম- “যে শাস্ত্রে কোনো ভাষার বিভিন্ন উপাদানের গঠন-প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার-বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিভিন্ন উপাদানের সম্পর্ক নির্ণয় ও প্রয়োগবিধি বিশদভাবে আলোচিত হয়, তাকে সেই ভাষার ব্যাকরণ বলে”। বাংলা ভাষার ব্যাকরণের ক্ষেত্রেও এই একই কথা বলা প্রযোজ্য।

ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা (The Needs of Learning Grammar):

ব্যাকরণপাঠের চিরাচরিত ধারাকে যাঁরা সমর্থন করেন, তাঁদের কাছে ব্যাককরণপাঠের প্রয়োজনীয়তা হচ্ছে- 1. ভাষার বিভিন্ন উপাদানের গঠন প্রকৃতি জানা। 2. ভাষার বিভিন্ন উপাদানের সুষ্ঠু ব্যবহার করা। 3. ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে শুদ্ধাশুদ্ধি নির্ণয় করতে পারা।

বাংলা ব্যাকরনের আলোচ্য বিষয় (The Topics of Discussion on Bengali Grammar):

প্রতিটি ভাষায় চারটি মৌলিক অংশ থাকে- ধ্বনি, শব্দ, বাক্যঅর্থ । বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও প্রধানত চারটি অংশে আলোচিত হয়- 1. ধ্বনিতত্ত্ব, 2. শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব, 3. বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম, 4. শব্দার্থতত্ত্ব

ধ্বনিতত্ত্ব (Phonology): ধ্বনিতত্ত্ব আমাদের শেখায় কেমন করে বাংলা শব্দ ও বাক্য উচ্চারণ করতে হয়।

শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব (Morphology): শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব আমাদের শেখায় কেমন করে বাংলা শব্দ তৈরি করতে হয়। অন্যের তৈরি শব্দ বুঝতে পারাও রূপতত্ত্বের আলোচ্য বিষয়।

বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম (Syntax): বাক্যতত্ত্বে আমরা বাক্য গঠন করার কৌশল জানতে পারি এবং অন্যের তৈরি করা বাক্যের গ্রহণযোগ্য নিরূপণ করতে পারি।

শব্দার্থ তত্ত্ব (Semantics): শব্দার্থতত্ত্ব শব্দ ও বাক্যের অর্থ নিয়ে আলোচনা করে।

বাংলা ভাষার এই মূল চারটি অংশকে কেন্দ্র করে যেভাবে বিদ্যালয় স্তরে বাংলা ব্যাকরণের পাঠ্যক্রম তৈরি হয়েছে, এটা খুঁটিয়ে দেখা দরকার।

ব্যাকরণ শিক্ষনের এর বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি(Different Approaches of Grammar Teaching):

পূর্বের আলোচনাতে আমরা ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে জেনেছি। কিন্তু কিভাবে শিক্ষার্থীরা এ বিষয়গুলি শিখবে তা আলোচনা করা দরকার। ব্যাকরণ শিক্ষণের নানা দৃষ্টিভঙ্গি প্রচলিত আছে। এর মধ্যে প্রধান দুটি দৃষ্টিভঙ্গি হলো- 1. অবরোহী দৃষ্টিভঙ্গি (Deductive Approach), 2. আরোহী দৃষ্টিভঙ্গি (Inductive Approach)

অবরোহী দৃষ্টিভঙ্গি (The Deductive Approach):

অবরোহী দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রথমে ব্যাকরণের নিয়ম বলা হয়, তারপরে উদাহরণ দেওয়া হয়। অর্থাৎ সাধারণ থেকে বিশেষের দিকে যাওয়া হয়। একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

সন্ধির একটি সাধারণ নিয়ম হলো এই রকম- শব্দের শেষ ধ্বনি যদি ‘ত’ বা ‘দ’ হয় এবং শব্দের প্রথম ধ্বনি যদি ‘চ’ বা ‘ছ’ হয়, তবে ‘ত’ বা ‘দ’ স্থানে ‘চ’ হবে এবং পরের ‘চ’ বা ‘ছ’ তার সঙ্গে যুক্ত হবে। যেমন- উৎ+চারণ= উচ্চারণ।

এক্ষেত্রে সন্ধি তথা ব্যাকরণের নিয়ম প্রথমে বলা হল এবং পরের উদাহরণ দেওয়া হল।

এই দৃষ্টিভঙ্গির কিছু সুবিধা আছেযেমন

1. এক্ষেত্রে সরাসরি বিষয়ে প্রবেশ করা যায় এবং সময় বাঁচে।

2. এই পদ্ধতি বুদ্ধিমত্তা এবং পরিণতবুদ্ধি-কে সম্মান জানায়।

3. এই পদ্ধতি ভাষার দক্ষতা অর্জনের বোধ প্রক্রিয়াকে স্বীকৃতি দেয়।

তবে এই পদ্ধতির কিছু ত্রুটিও আছেসাঈদ

1. প্রথমেই নিয়ম দিয়ে শুরু করার ফলে পাঠ্য নিয়মটি অনেক শিক্ষার্থীর মনোযোগ আকর্ষণ নাও করতে পারে। অনেক সময় শিক্ষার্থী এই নিয়মগুলি বুঝতে সক্ষম নাও হতে পারে।

2. এটি একটি শিক্ষককেন্দ্রিক পদ্ধতি, যেখানে শিক্ষার্থীর কোনো অংশগ্রহণ থাকে না।

3. এই পদ্ধতি ভাষাশিক্ষায় ব্যাকরণের নিয়মকেই গুরুত্ব দেয়।

আরোহী দৃষ্টিভঙ্গি(Inductive Approach):

এই দৃষ্টিভঙ্গি অবরোহী দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীত। এক্ষেত্রে প্রথমে একাধিক উদাহরণ দেওয়া হয় এবং পরে সে উদাহরণগুলি বিশ্লেষণ করে সূত্র বা সিদ্ধান্তে আসা হয়। অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে বিশেষ থেকে সাধারন এ যাওয়া হয়। যেমন-

উদাহরণ-১ : উৎ+চারণ= উচ্চারণ

উদাহরণ-২ : বিপদ্+চিন্তা= বিপচ্ছিন্তা

উদাহরণ-৩ : উৎ+ছল= উচ্ছল

উপরের উদাহরণ গুলি বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে সন্ধির ক্ষেত্রে প্রথমে শব্দের শেষ ধ্বনি যদি ‘ত’ বা ‘দ’ হয় এবং পরের শব্দের প্রথম ধ্বনি যদি ‘চ’ বা ‘ছ’ হয় তবে ‘ত’ বা ‘দ’ স্থানে ‘চ’ হয় এবং এই ‘চ’ পরের ‘চ’ বা ‘ছ’ -এর সঙ্গে যুক্ত হয়। এ ক্ষেত্রে ‘বিশেষ’ উদাহরণ থেকে ‘সাধারণ’ সিদ্ধান্তে আসা হলো

বর্তমানে এই পথ থেকে শ্রেষ্ঠ বলে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে, কারণ-

1. এই পদ্ধতিতে ব্যাকরণ এর নিয়ম অনেক বেশি অর্থপূর্ণ ও স্মরণীয় হয়।

2. এই পদ্ধতিতে মানসিক প্রচেষ্টা সক্রিয় থাকে।

3. শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ অনেক বেশি থাকে।

তবে এই পদ্ধতির কিছু ত্রুটিও আছে। যেমন-

1. এই পদ্ধতিতে সরাসরি বিষয়ে প্রবেশ করা যায় না বলে সময় ও শক্তি খরচ বেশি হয়।

2. যে সমস্ত শিক্ষার্থীর নিজস্ব রীতি নীতি নেই অথবা পূর্বের কোনো শিখন অভিজ্ঞতা নেই, তাদের কাছে নিয়ম পদ্ধতি (অর্থাৎ অবরোহী দৃষ্টিভঙ্গি) অনেক বেশি পছন্দ।

এছাড়াও ব্যাকরণ শিক্ষণের ক্ষেত্রে আরো কয়েকটি দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলা যায় যেগুলি কোনো না কোনোভাবে অবরোহী বা আরোহী দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে যুক্ত। যেমন- সূত্র পদ্ধতি, বিশ্লেষণ পদ্ধতি, প্রসঙ্গ পদ্ধতি।

এ পর্যন্ত যে আলোচনা হল, তা থেকে স্পষ্ট হয় যে, ব্যাকরণ পাঠের চিরাচরিত ধারায় ‘ব্যাকরণ’কে ব্যাকরণ হিসেবে যতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়, ভাষা শিক্ষার সহায়ক উপাদান হিসেবে ততটা দেওয়া হয় না। ব্যাকরণ ভাষার মূল অংশ নিয়ে আলোচনা করে-এটা ঠিক। কিন্তু ওই সমস্ত অংশের বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের আড়ালে ‘ভাষা’টাই যেন হারিয়ে যায়। ব্যাকরণ নিজেই একটা বিষয় হিসেবে শিক্ষার্থীর মাথায় চেপে বসে। ভাষাটা গৌণ হয়ে যায়, কিন্তু আমরা যখন বলি, “ভাব বা ধারণার যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ভাষা শিক্ষায় ব্যাকরণের ভূমিকা কি?” -তখন ব্যাকরণ ভাষা শিক্ষার সহায়ক উপাদান হিসেবেই আলোচিত হয় এবং এখানে ব্যাকরণ শিখন ও শিক্ষণের চিরাচরিত ধারাকে অতিক্রম করতে হয়।

তাহলে উপায় কি?

ব্যাকরনের চিরাচরিত দৃষ্টিভঙ্গির যারা সমর্থক, তারা মনে করেন যে, ভাষা শিখনের ক্ষেত্রে ব্যাকরণের গুরুত্ব অপরিসীম। তাদের কাছে ব্যাকরণ ভাষার একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তারা বিশ্বাস করেন, শিক্ষার্থীর যদি ব্যাকরণ জ্ঞান না থাকে তাহলে তারা শুদ্ধভাবে ভাষা বলতেও বা লিখতে পারবে না।

সাম্প্রতিক অতীতে বেশ কিছু মানুষের মধ্যে অন্য একটি দৃষ্টিভঙ্গির জন্ম হয়েছে, যারা ভাষাকে কেবল যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবেই দেখতে চান। এদের দৃষ্টিভঙ্গিকে বলা হয় communicative approach । এই দৃষ্টিভঙ্গের সমর্থকেরা মনে করেন যে, ভাষার মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ব্যাকরণের তেমন কোনো প্রয়োজন নেই। প্রমাণ হিসেবে তারা শিশুর মাতৃভাষায় কথা বলার ক্ষমতার জন্য বিষয়টি উল্লেখ করেন। একজন শিশু পাঁচ বছর বয়সেই ব্যাকরণের শিক্ষা গ্রহণ না করে ব্যাকরণগত দিক থেকে শুদ্ধ বাক্য প্রয়োগ করতে পারে। তারা আরো মনে করেন-

1. চিরাচরিত ব্যাকরণ শিক্ষায় input অনেক বেশি, output সামান্য। অর্থাৎ যা শেখা হয় তার সমস্তটা প্রয়োগ করা হয় না।

2. ব্যাকরণগত বিশ্লেষণ সংহত চিন্তাকে বাধা দেয়। কারণ এক্ষেত্রে বিস্তারিত ব্যাখ্যার প্রতি এত বেশি আলোকপাত করা হয় যে শিক্ষার্থী ‘বিস্তারিত’ এর সঙ্গে ‘সমগ্রতার’ সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে না।

একেবারে সাম্প্রতিককালে ভাষা শিক্ষায় ব্যাকরণের ভূমিকাকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হচ্ছে। এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি কে বলা হয় আবিষ্কার কৌশল। এই পদ্ধতিতে ব্যাকরণ এর মাধ্যমে ভাষা শিক্ষা দেয়া হয় না, বরং ভাষার মধ্য দিয়েই ব্যাকরণকে খুঁজে বার করা হয়। শিক্ষার্থীর সামনে উদাহরণ হিসেবে একাধিক বাক্য রাখা হয়, বাকাগুলি কিভাবে আত্মপ্রকাশ করছে তা জিজ্ঞাসা করা হয়। একটি বাক্যের সঙ্গে অন্য একটি বাক্যের পার্থক্য খুঁজে বের করতে বলা হয়- এইভাবে বাক্যগুলি বিশ্লেষণ করতে করতে শিক্ষার্থীরা ব্যাকরণের নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারে। বলা যেতে পারে যে, ব্যাকরণ এর নিয়ম অর্জন করতে শেখে। এই পদটির সুবিধা খুব পরিষ্কার। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থী পুরোপুরি সক্রিয় থাকে, তারা তাদের বোধ প্রক্রিয়াকে সক্রিয় রাখে। এটি অনেক বেশি শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক। আসলে এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই নিজেদের জন্য ব্যাকরণ এর তথ্য আবিষ্কার করে।

বর্তমান প্রবণতা (Present Trend):

ভাষা শিক্ষায় ব্যাকরণের ভূমিকা নিয়েছি আদর্শ নীতি বাক্য বা স্লোগান শোনা যায় তা এইরকম-

যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ব্যাকরণ শেখান-ব্যাকগ্রাউন্ড শেখানোর জন্যই শুধু শেখাবেন না: যোগাযোগ বা ভাবের আদান-প্রদান যেখানে ভাষার মূল উদ্দেশ্য, সেখানে ব্যাকগ্রাউন্ড কেউ সেই পথে চালিত করা দরকার। আমরা চাই, আমাদের শিক্ষার্থীরা ভাষাজ্ঞান লাভ করুক, ভাষা সংক্রান্ত জ্ঞান নয়। তাই ব্যাকরনের জন্যই ব্যাকরণ শিক্ষা নয়, যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ভাষা শিক্ষায় যতটুকু ব্যাকরণ প্রয়োজন, ততটুকু ব্যাকরণ শিক্ষাই যথেষ্ট।

ব্যাকরণকে কথাবার্তার মধ্যে আলোচনা করুন, বিচ্ছিন্ন বাক্যের মধ্যে নয়: চিরাচরিত ব্যাকরণ বইগুলিতে অসংখ্য অনুশীলনী থাকে। সেখানে যে সমস্ত বাক্য ব্যবহার করা হয় তার সঙ্গে শিক্ষার্থীর বাস্তব জীবনের কোন সম্পর্ক থাকে না। অনেক সময়ই বাক্যগুলি কৃত্রিম বা অবাস্তব হয়। বাস্তব জীবনে শিক্ষার্থী যে ধরনের বাক্যে কথা বলে এবং লেখে, ভাষা শিক্ষায় সেইসব বাক্য ব্যবহার করা প্রয়োজন। তবে শিক্ষার্থীর বাস্তব জীবনে ব্যবহারের উপযোগী ভাষার শিখতে পারবে।

কোনো প্রসঙ্গ আলোচনার মাধ্যমেই ব্যাকরণ শেখান: বেশিরভাগ সময়ে শিক্ষক মহাশয় ব্যাকরণের একটা নির্দিষ্ট ক্ষেত্র বেছে নিয়ে বিভিন্ন দিক থেকে তার আলোচনা বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেন। এতে শিক্ষার্থী ক্লান্তি অনুভব করে। কারণ বাস্তবে সঙ্গে বিষয়টির কোন জোকসূত্র তারা খুঁজে পায় না। “আমি ভাত খাই” এবং “আমার দ্বারা ভাত খাওয়া হয়”- এই দুটি বাক্যের মধ্যে পার্থক্য কি? শিক্ষার্থীরা প্রায় হতবুদ্ধি ও দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। আসলে ‘কর্মপ্রাচ্য’ বিষয়টি যদি প্রতিবেদন রচনার প্রেক্ষিতে শেখানো হয়, তাহলে তা শিক্ষার্থীর কাছে অনেক বেশি জীবন্ত হয়ে ওঠে।

এতক্ষণ পর্যন্ত যে আলোচনা হল, তা থেকে একটা বিষয় খুব পরিষ্কার যে, ভাব বা ধারণার আদান-প্রদান বা সংযোগ স্থাপনের জন্য যে ভাষা শিখন, তাতে ব্যাকরণের চিরাচরিত দৃষ্টিভঙ্গি খুব একটা কার্যকরী নয়। ভাষা শিখনে ব্যাকরনের ভূমিকার যে ‘বর্তমান প্রবণতা’ এখানে আলোচিত হয়েছে সেটি অনেক বেশি ফলদায়ক।

PDF File Details

  • File Name :- ভাষা শিক্ষায় ব্যাকরণের ভূমিকা
  • No.of Page:- 6
  • Location:- Google Drive
  • Download Link:- [Download]

 

 

 

Leave a comment