শিশুর বিকাশে ভাইগটস্কির ধারণা pdf || Vigotsky Social learning theory pdf

শিশুর বিকাশে ভাইগটস্কির ধারণা pdf || Vigotsky Social learning theory pdf

শিশুর বিকাশে ভাইগটস্কির ধারণা pdf || Vigotsky Social learning theory pdf

শিশুর বিকাশে ভাইগটস্কির ধারণা

🔷 একজন শিশুর বিকাশ কোন বিষয়ের উপর নির্ভর করে? কেবলমাত্র তার শারীরিক বিকাশের ওপর, পরিবারের সদস্যদের ওপর নাকি শিশুর বিকাশে সামাজিক পরিবেশের ভূমিকাও রয়েছে? এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর পাবার জন্য এ বিষয়ে সর্বপ্রথম আলোকপাত করেন একজন রাশিয়ান মনোবিজ্ঞানী, লেভ ভাইগটস্কি। 1962 সালের দিকে তার তত্ত্বসমূহ আমেরিকান মনো বিজ্ঞানীদের মধ্যে আগ্রহের জন্ম দেয়। তাকে “মোজার্ট অফ সাইকোলজি” বলা হয়। শিশুর বিকাশের ক্ষেত্রে ভাইগটস্কির দেওয়া তত্ত্বটিকে “Social learning theory” বলা হয়ে থাকে। এ তত্ত্বটির মূল প্রতিপাদ্য হলো, একজন শিশুর বিকাশের ক্ষেত্রে তার পরিবার, চারপাশের পরিবেশ, তাকে প্রদানকৃত শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

🔷 তার ভাষ্য, তিনটি ধারণা শিশুর বিকাশের সাথে সম্পর্কযুক্ত বলে তিনি দাবি করেন, সেগুলো হল- 1. শিশুর জ্ঞানীয় দক্ষতাগুলোকে যদি বিকাশগত দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করা যায়, তবে তাতে সামাজিক পরিবেশের ভূমিকা সহজে বুঝা যায়। 2. শব্দ, ভাষা ও বিভিন্ন ধরনের অভিব্যক্তি শিশুর মানসিক কাজকে সহজ এবং পরিবর্তনে সাহায্য করতে পারে। 3. জ্ঞানীয় দক্ষতাগুলোর মূল উৎস হলো সামাজিক সম্পর্ক এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক পটভূমি। অর্থাৎ, শিশুর বিকাশকে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাজগুলো থেকে আলাদা করা সম্ভব নয়।

Zone of Proximal Development-ZPD

🔷 জোন অফ প্রক্সিমাল ডেভেলপমেন্ট (জে.পি.ডি.) দ্বারা কতগুলো কাজকে বোঝানো হয়ে থাকে যার মাঝে কিছু কাজ শিশু একা একাই করতে পারে আবার কিছু কাজ আছে যা তার একার পক্ষে সম্পাদন করা কঠিন। দ্বিতীয় কথাটির ক্ষেত্রে মজার বিষয় হল, যে কাজগুলো বা সমস্যাগুলো শিশু নিজে নিজে সমাধান করতে পারে না, সে কাজগুলো করার জন্য সে যদি একজন দক্ষতা সম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির বা সমবয়সী শিশুর (তে ঐ কাজটিতে দক্ষ) কাছে থেকে কাজটি করার বা সমস্যাটি সমাধান করার ঠিক নির্দেশনা পায়, তবে শিশু আগে যে কাজটি নিজে করতে পারত না, এখন তা সহজেই নিজে নিজে করতে শিখে যায়।

🔷Z.P.D. ভাইগটস্কি বলেছেন, “The distance between the actual developmental level as determined by independent problem solving and the level of potential development as determined through problem solving under adult guidance or in collaboration with more capable peers.”- (Vigotsky,1935)

স্ক্যাফোল্ডিং (Scaffolding)

🔷 শিশুর নতুন কিছু শেখার ক্ষেত্রে কাজটি করার জন্য বা কোন সমস্যা সমাধানের জন্য অধিক দক্ষ ব্যক্তির মাধ্যমে তাকে যে সহযোগিতা দেওয়া হয়, তাকে স্ক্যাফোল্ডিং বলে। এক্ষেত্রে শিশুটির বাবা, মা, শিক্ষক কিংবা ওই সমস্যাটি সমাধানে তার চাইতে বেশি দক্ষ সহপাঠী প্রথমে তাকে সমস্যাটি সমাধান করার উপায় দেখিয়ে দেন, কিছু ক্লু বলে দেন এবং সমাধান করার সময় মুখে মুখে সমাধানটি বলতে থাকেন। এ প্রক্রিয়াটি দুইবার তার চাইতে বেশিবার শিশুকে দেখানো যেতে পারে। প্রয়োজনে শিশুকে প্রশ্নও করা যেতে পারে। অবশেষে, শিশুটিকে যখন কোন সমস্যার সমাধান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে, কখন ভুল বা ঠিক নির্বিশেষে ইতিবাচক প্রক্রিয়া দেখাতে হবে যাতে করে শিশু সমস্যা সমাধান করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। সেই সাথে শিশুর ভুলটি যেন তাকে ইতিবাচকভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখাটাও জরুরী। ধীরে ধীরে শিশুটি যখন নিজে নিজে সমস্যাটি সমাধান করার যোগ্য হয়েও পড়বে, তখন সহযোগিতার মাত্রা কমিয়ে দিতে হয়। অবশেষে কাজটি যখন শিশু সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে করতে পারবে, তখন সহযোগিতা বা ক্লুগুলো ধীরে ধীরে সরিয়ে নিতে হবে। এ প্রসেসটিকে ‘ফেইডিং‘ বলে।

ভাষা ও চিন্তন (Language and Thought)

🔷ভাইগটস্কি বিশ্বাস করতেন যে, শিশুরা ভাষা কেবলমাত্র সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার জন্য ব্যবহার করে না, বরং ভাষা কে তারা পরিকল্পনা, নির্দেশনা, পর্যবেক্ষণ করার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করে থাকে। এ সকল কাজের জন্যে ভাষার এ ধরনের ব্যবহার কে অভ্যন্তরীণ কথোপকথন বা ‘Inner Speech’ বলা হয়ে থাকে। ভাইগটস্কির মতে, ভাষা এবং চিন্তন আলাদাভাবে বিকাশ লাভ করলেও পরে তা একত্রিত হয়ে যায়। শিশুরা সামাজিক যোগাযোগের জন্য ভাষা ব্যবহারের আরো আগে থেকে সে তার নিজের চিন্তার ওপর বেশি মনোযোগ দিয়ে থাকে। প্রথমে শিশু তার চিন্তাকে মুখে উচ্চারণ করে প্রকাশ করে ফেলে, সাধারণভাবে বলতে গেলে, নিজের সাথে কথা বলে। ধীরে ধীরে সে তার চিন্তাকে সব সময় প্রকাশ না করে নিজের মাঝে রাখতে শিখে যায়। সাধারণত তিন থেকে সাত বছরের মধ্যকার সময়ে শিশু এ বিষয়টি শিখে ফেলতে পারে। ভাইগটস্কির মতে, যে শিশু তার ভাষাকে যত বেশি তার পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও পরিবর্তনের কাছে ব্যবহার করে, সে শিশু সামাজিকভাবে তত বেশি উপযুক্ত হয়, সামাজিক যোগাযোগ তত বেশি দক্ষ হয়।তবে শিশুকে নির্দেশনা দেওয়া এবং সহযোগিতা করা সব সময় কোন কাজ শিখতে বা সমস্যা সমাধান করতে একই রকম সাফল্য আনবে-এমন কোন কথা নির্দিষ্ট ভাবে বলা যায় না। যদিও ভাইগটস্কির তত্ত্বটি শিশুর বয়সের সাথে আসা শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনকে তেমনভাবে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠেনি,তা সত্বেও এটি সামাজিক প্রেক্ষাপটে শিশুর জ্ঞানের নির্মাণের সমর্থন দেয়। অর্থাৎ, শিশুর জ্ঞানী ও বিকাশের ক্ষেত্রে শারীরিক বিষয়ের পাশাপাশি সামাজিক পরিবেশ, সহযোগিতা এবং নির্দেশনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

⇐নীচে pdf এর লিংক টি শেয়ার করা হল⇒

  • File Name:- শিশুর বিকাশে ভাইগটস্কির ধারণা
  • No.of Page:- 3
  • Location:- Google Drive
  • Download Link:- [Download]

আরও পড়ুন 

বৃদ্ধি ও বিকাশের সমস্ত তথ্য 

সামাজিকীকরণের ধারণা

পিঁয়াজের জ্ঞানমূলক বিকাশের তত্ত্ব

কোহলবার্গের নৈতিক বিকাশের তত্ত্ব

 

Leave a comment