ভাইরাস আক্রান্ত কয়েকটি রোগ এবং তাদের সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য||Viral disease | Prevention Treatment Symptoms
1. গুটি বসন্ত বা স্মল পক্স:
• আক্রমণকারী ভাইরাস:- Variola sp. (ভ্যারিওল স্পি.)
• রোগ বিস্তারের পদ্ধতি:-গুটি শুকনার সময় বায়ু দ্বারা।
• রোগের লক্ষণ:-সারা শরীরে গুটি হয়। মুখে, হাতে এবং পায়ে বেশি হয়। সেরে গেলে ক্ষত চিহ্ন থাকে।
• রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা:-আলাদা করে রোগীকে রাখা; ভ্যাকসিন দেওয়া।
2. চিকেন পক্স বা জলবসন্ত:
• আক্রমণকারী ভাইরাস:- Vaccinia sp. (ভ্যাকসিনিয়া স্পি.)
• রোগ বিস্তারের পদ্ধতি:-গুটি শুকনো সময় বায়ু দ্বারা।
• রোগের লক্ষণ:- জ্বরের সাথে সারা শরীরের গুটি উঠতে থাকে। মুখে,হাতে ও পায়ে বেশি হয়।
• রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা:- আলাদা করে রোগীকে রাখা: খোসাগুলি বা গুটের মামড়ি জমিয়ে পুড়িয়ে ফেলা; রোগীর ব্যবহৃত জিনিসপত্র, জামাকাপড় নজর করা।
3. ইনফ্লুয়েঞ্জা:
• আক্রমণকারী ভাইরাস:- Influenza furvirus(Orthomixo Virus)
• রোগ বিস্তারের পদ্ধতি:- রোগীর কাশি, হাঁচি এবং বের হওয়া নিউকাস দ্বারা।
• রোগের লক্ষণ:- শুরুতে হাঁচি, কাশি, নাক দিয়ে জল পড়ে। গা, হাত, পা ব্যথা সহ তীব্র জ্বর হয়।
• রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা:- প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও রোগীকে আলাদা রাখা।
4. হাম বা মিসল:
• আক্রমণকারী ভাইরাস:- Rubella Virus.
• রোগ বিস্তারের পদ্ধতি:- বায়ুর দ্বারা রোগীর গলার এবং নাকের মিউমেস থেকে রোগ ছড়ায়।
• রোগের লক্ষণ:- হাঁচি, কাশি, জ্বর, চোখ মুখ ফুলে লাল হয় ও সারা শরীরে লাল দানার মত তৈরি হয়।
• রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা:- টিকা নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করা, রোগীকে আলাদা করা।
5. জলাতঙ্ক বা রেবিস:
• আক্রমণকারী ভাইরাস:- Robies Virus (Streat Virus)
• রোগ বিস্তারের পদ্ধতি:- বিড়াল, কুকুর, শিয়াল ইত্যাদি পাগল হয়ে কামড়ালে হয়।
• রোগের লক্ষণ:- জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা, ঢোক গিলতে কষ্ট হয়, তৃষ্ণা থাকলেও জলে আতঙ্ক। সুষমাকান্ড ও মস্তিষ্কের স্নায়ু ধ্বংস হয়।
• রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা:- রেবিস এর প্রতিষেধক সিরাম ইনজেকশন নেওয়া।
6. মাম্পস:
• আক্রমণকারী ভাইরাস:- Mumps Virus
• রোগ বিস্তারের পদ্ধতি:- কফ, থুতু, সর্দি থেকে বিস্তার লাভ করে।
• রোগের লক্ষণ:- গলা, গাল ফুলে ব্যাথা হয়, জ্বর হতে পারে। লালা গ্রন্থি প্রধানতঃ প্যারাটিড গ্রন্থী আক্রান্ত হয়।
• রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা:- রোগীকে আলাদা করে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া।
7. জন্ডিস বা হেপাটাইটিস:
• আক্রমণকারী ভাইরাস:- Hepatitis Virus-A.B(HAV,HBV)
• রোগ বিস্তারের পদ্ধতি:- সংক্রমিত পানীয় জল এবং রক্ত দ্বারা।
• রোগের লক্ষণ:- যকৃত আক্রান্ত হয়, রক্তে বিলিরুবিন বেড়ে যায়, মূত্র, ত্বক, চোখ হলুদ হয়ে যায়।
• রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা:- খাদ্যদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ করা ও রোগীকে বিশ্রাম দেওয়া।
8. পোলিও:
• আক্রমণকারী ভাইরাস:- Pliomyelitis sp.
• রোগ বিস্তারের পদ্ধতি:- মাছির দ্বারা খাদ্য এবং জল থেকে।
• রোগের লক্ষণ:- সুষমাকান্ডের চেষ্টীয় অংশ আক্রান্ত হয় বলে পা এবং হাতের প্যারালাইসিস হয়।
• রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা:- ভ্যাক্সিনেশন দ্বারা।
9. কমন কোল্ড বা সাধারণ কোল্ড:
• আক্রমণকারী ভাইরাস:- Rhino Virus
• রোগ বিস্তারের পদ্ধতি:- আক্রান্ত রোগীর কাশি হাঁচির দ্বারা।
• রোগের লক্ষণ:- জ্বর, চোখ দিয়ে জল পড়া, হাঁচি, কাশি, মাথা যন্ত্রণা, গা হাত পা ব্যথা, অস্বস্তিভাব।
• রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা:- সাধারণ ওষুধ সেবন।
10. ট্রাকোমা:
• আক্রমণকারী ভাইরাস:- Trachoma Virus
• রোগ বিস্তারের পদ্ধতি:- আক্রান্ত রোগীর ব্যবহৃত কাপড়চোপড় দ্বারা।
• রোগের লক্ষণ:- চোখ ফুলে যায়, লাল হয় এবং ব্যথা করে। চোখ থেকে মিউকাস ক্ষরণ হয়।
• রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা:- আক্রান্ত রোগী হতে দূরে থাকা, জীবননাশক ড্রপ ও মলম লাগানো, চোখ পরিষ্কার রাখা।
11. AIDS:
• আক্রমণকারী ভাইরাস:- HIV
• রোগ বিস্তারের পদ্ধতি:- আক্রান্ত রোগীর রক্ত, রক্তরস, বীর্য থেকে।
• রোগের লক্ষণ:- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়।
• রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা:- কোনরকম রক্ত, রক্তরস, বীর্য ইত্যাদি যেন অন্য শরীরে না যায় সেদিকে নজর রাখা। কোন প্রতিষেধক নেই।
12. ডেঙ্গু জ্বর:
• আক্রমণকারী ভাইরাস:- Dengu Virus
• রোগ বিস্তারের পদ্ধতি:- মশার দ্বারা।
• রোগের লক্ষণ:- সারা দেহ ও মাথায় তীব্র যন্ত্রণা, মূলতঃ অস্থিগুলি বেশি আক্রান্ত হয়। খুব জ্বর হয়।
• রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা:- সাধারণ এবং অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ানো।
13. এনকেফালাইটিস:
• আক্রমণকারী ভাইরাস:- Encephalitis Virus
• রোগ বিস্তারের পদ্ধতি:- মূলতঃ মশার দ্বারা (এডিস ও কিউলেক্স মশার দ্বারা)
• রোগের লক্ষণ:- মাথায় খুব যন্ত্রণাসহ জ্বর, আচ্ছন্নতা, স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হয়।
• রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা:- মশা থেকে নিষ্কৃতি এবং অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া।
- আরও পড়ুন:- ভাইরাস সম্পর্কিত কুইজ